You are currently viewing রক্ত রাঙা শিমুল বাগানে

রক্ত রাঙা শিমুল বাগানে

সুনামগঞ্জের আদি ইতিহাস প্রাচুর্যে ভরপুর হলেও বর্তমান সময়ে সুনামগঞ্জের ব্র‍্যান্ডিং করছে জয়নাল আবেদীনের যত্নে গড়াশিমুল বাগান। জাদু কাটা নদীর তীর ঘেষে লাউয়েরগঢ় বাজারের অপর পাশে গড়ে উঠেছে এই বগান।   বসন্তের আগমনের সাথে সাথেই সারি সারি দাড়ানো শিমুল গাছগুলো ছেয়ে যায় রক্ত রঙে। তখন যেদিকেই চোখ যায়  লাল লাল আর লাল। গাছে গাছে রক্তিম শিমুলের ঝাপটা এসে চোখে লাগে। বাগান ভর্তি মাটিতে লুটিয়ে থাকে ঝরে পড়া শিমুল ফুল। দূর থেকে কাউকে হেটে আসতে দেখলেও মনে হয় কেউ লাল গালিচার উপর দিয়ে হেটে আসছে।   অবচেতন মনে ধারনা হয় লালের রাজ্যে চলে এসেছি আমরা।  বর্ষায় আর শীতে দুইবার শিমুল বাগান গেলেও বসন্তে রঙিন শিমুল বাগান দেখার সৌভাগ্য তখনো হয়নি। তবে বর্ষার শিমুল বাগানের সৌন্দর্য কোনোমতেই কম নেই। বসন্তের শিমুল বাগান যদি অষ্টাদশী রমনীর চুলের গুজে দেওয়া জবা ফুলের সৌন্দর্য হয় তবে বর্ষার সবুজ সতেজ শিমুল বাগান সেই একি রমনীর স্নিধ ভেজা চুলের রুপ। 

দ্বিতীয় বারের মতো চাকরি নিয়ে ২০১৭ সালে সিলেটে বিভাগে যাওয়ার পরে পোস্টিং এবার সিলেট শহরে। আগের বারে তিন বছর ছিলাম মৌলভীবাজার। আমি যাওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের মধ্যে কয়েকজন প্রতি সপ্তাহে একবার করে আমাকে সিলেটে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা শোনাতে লাগলো। আমার কাছে যাবে, আমার সাথে ঘুরবে। এরকমভাবে বলতো যেনো ওরা সিলেটে যাওয়ার বাসে বা ট্রেনে উঠেই গেছে। তাই আমিও ওদেরকে জানিয়ে দিয়েছিলাম বাসে বা ট্রেনে উঠেই যেনো আমাকে জানায়। এর আগে যতোই বলুক ওদের পরিকল্পনায় আমি নাই। একদিন সত্যি সত্যি আমাকে অবাক করে দিয়ে ওরা জানালো ট্রেনের টিকেট নাকি কেটে ফেলেছে। তবু আমার বিশ্বাস হচ্ছিলোনা। যখন টিকেটের ছবি তুলে পাঠালো তখন বিশ্বাস করতে বাধ্য হলাম। 

আসার আগে ওরা কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবে এরকম কোনো পরিকল্পনা হয়নি, বলেছিলাম তোমরা আসো ঘূরানোর দায়ত্ব আমার। রাতের ট্রেনে উঠে যখন ওরা ফোন করলো তখনি ঠিক করলাম এই বসন্তে রক্ত মাখা শিমুল বাগান হবে গন্তব্য। জলের রাজ্য সুনামগঞ্জের বসন্তের রঙিন রুপটা দেখতে হবে, দেখাতে হবে ঢাকা থেকে আসা অতিথিদের। ঢাকা থেকে ট্রেনে উঠেছে বরিশালের ছেলে সৌরভ সাথে নোয়াখালীর নুসরাত। বরিশাল নোয়াখালীর এতো বৈরিতার মাঝখানেও ওদের মধ্যে বন্ধু থেকে আরেকটু গভীর বন্ধুত্বের একটা সম্পর্ক কিভাবে হয়ে গেছে এটা আমার কাছে অষ্টম আশ্চর্য লাগে। নুসরাতের দুই ছোট বোন তৃষা আর পুষ্প। সেইসাথে বরিশালের আরেক বন্ধু মিলন, চট্টগ্রামের স্যামি আর পাহাড়ি বন্ধু সুইচিং মারমা।        

সকালে ঘুম থেকে উঠে ওদের ফোন করলাম কোথায় জানার জন্য, তখন সকাল ৭ টা বাজে এরমধ্যে ওদের পৌছে যাওয়ার কথা। কিন্তু শুনে অবাক হলা ওরা এর আগেই পৌছে গেছে। উপবন এক্সপ্রেস মাঝপথে এক্সিডেন্ট করে বগি লাইনচ্যুত হওয়াতে ওরা ট্রেন থেকে নেমে সিলেটগামী এক বাসে উঠে চলে এসেছে। কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে ওদেরকে কুমার গাও সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আসার নির্দেশনা দিয়ে আমি ঝটপট রেডি হয়ে বেড়িয়ে গেলাম। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখা হলো কুশল বিনিময় আর রাতের মর্মান্তিক ঘটনার সার-সংক্ষেপ শুনতে শুনতে সুনামগঞ্জের বাসে চেপে বসলাম। 

প্রায় দুই ঘন্টার বাস ভ্রমণের পর নামলাম সুনামগঞ্জের নতুন ব্রিজে। এখানে নেমেই এক বিশাল ধাক্কা খেলাম। খুব অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী শিমুল বাগানের যৌবনের কথা ছড়িয়ে গেছে দেশব্যাপী। শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়াতে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছে সুনামগঞ্জে। সবার উদ্দেশ্য শিমুল বাগান দর্শন। কিন্তু এখানে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কি একটা আন্দোলনে পুলিশের লাঠি চার্জের ঘটনায় প্রধান যানবাহন লেগুনা, সি এন জি চলাচল বন্ধ। পাশের হোটেলে ঢুকে হাওরের ছোট ট্যাংরা মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে সকালের নাস্তা করলাম কিছু সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে যদি যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয় এই আশায়। কিন্তু অনেক সময় অপেক্ষা করেও যখন উপায় মিলছেনা তখন বিকল্প ভাবতে হলো। হেটে হেটে ব্রিজের উপরে উঠে গেলাম। ব্রিজের উপরে কয়েকটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা/টমটম পেলাম। দরদাম করতে গিয়ে আবারো ধাক্কা খেলাম।

পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কয়েকগুন বেশী দাম হাকাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত ৮০০ টাকায় দফারফা হলো যাওয়া আসা সহ। তারপর ব্রিজের উপরে ফটোশুট শেষ করে যাত্রা শুরু করলাম। ধানের জমির মাঝখান দিয়ে রাস্তা, বর্ষায় যেগুলো জলে থৈথৈ করে এখন সেখানে ধানের চারা লাগানোর পালা। এরকম দৃশ্য দেখতে দেখতে এক বিশাল তরমুজ ক্ষেতের পাশে এসে উপস্থিত হলাম। ক্ষেত ভর্তি তরমুজ, কৃষক তরমুজ তুলে তুলে স্তুপ করার কাজে ব্যাস্ত। গাড়ি থামিয়ে দুইজন গেলাম নেমে গেলাম ক্ষেতে। সালাম দিয়ে কথা বলতেই পরিচয় জেনে তরমুজ খাওয়ার অফার করলেন। দুইটা নিয়ে আসলাম আর যে দামে বাজারে বিক্রি করে সেই দাম রাখার অনুরোধ করলাম। দুইটা তরমুজ ৪০ টাকা রাখলেন। 

আর কিছুক্ষন পরেই পৌছে গেলাম লাউয়েরগঢ় বাজারে। বাজার থেকে কিছু শুকনো খাবার পানি কিনে নিলাম। প্রচন্ড রোদ উঠেছে, জাদুকাটা নদী শুকিয়ে পাথুরে বালু চিকচিক করছে। চারদিকে বালু তোলার উৎসব। জায়গায় বিশাল বিশাল গর্ত করে বালু তুলে নেওয়া হয়েছে। শুনেছি এই বালুর নাকি সারাদেশে খুব চাহিদা। স্বচ্ছ জলের এই নদীর জল খুব কম ই আছে এই মুহুর্তে। এক জায়গায় সরু একটা খালের মতো প্রবাহিত হচ্ছে জল। সেখানেই খেয়া দিয়ে পার হতে হচ্ছে। খেয়া পর্যন্ত যেতে হাটতে হচ্ছে অনেক পথ। খেয়া পার হয়ে তার চেয়ে বেশী। প্রচন্ড রোদে, গরম বালুতে হেটে হাপিয়ে উঠলো সকলেই। হাপানো অবস্থাতেই যখন জয়নুল আবেদিনের শিমুল বাগানে পৌছে গেলাম তখন সবার চোখে মুখেই উচ্ছাস। শিমুলের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে সবার মুখ। অনেক লোকজন বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে। বিভিন জন বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন ভংগিমায় ছবি তুলছে। চারিদিকে উৎসব উৎসব ভাব। এলাকার লোকজন আসছে পর্যটক দেখতে। এক বয়স্ক স্থানীয়র সাথে কথা বলে জানা গেলো তাদের কাছে বিশ্বাস ই হচ্ছেনা এই শিমুল বাগান দেখতে এতো লোকের সমাগম হতে পারে।

এলাকায় বেশ উৎসব উৎসব ভাব, চারিদিকে লোকে লোকারণ্য।  এরমধ্যে যেদিকেই চোখ যায় বসন্তের রঙিন এই ফুলের আধিক্য। গাছের ডালে ডালে ফুল, মাটিতে ঝরে পড়া ফুল। কারো হাতে কুড়িয়ে নেওয়া ফুল। কেউবা আবার ঝরে পড়া ফুলের প্রেয়সীর নাম লিখে বিমোহিত করছেন অথবা ছবি তুলে নিচ্ছেন। এরমধ্যে চারপাশে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী সব দোকানপাটের পসরা। কেউ সশা-গাজর, কেউ বরই, কেউ ঠান্ডা পানীয়, কেউ চিপস বিস্কুটের দোকান সাজিয়ে বসেছে। আমরাও দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাওয়া জয়নুল আবেদীনের বাগানের যৌবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম।          

বাগানের মধ্যেই দেখা হয়ে গেলো সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত বগানের প্রতিষ্ঠাতা বাধাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ধনাঢ্য ব্যাবসায়ী জয়নুল আবেদীনের সাথে। ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন নিজের গড়ে তোলা বাগানে পাখির মতো বিচরণকারী দেশ-দেশান্তর থেকে আগত পর্যটকদের। বাগান স্থাপন বিষয়ে জানতে চাইলে হাসিমুখে জানালেন বাগান প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। মেঘালয়ের সীমান্ত ঘেষা তাহিরপুর উপজেলার মানিগাও গ্রামের জাদুকাটা নদীর তীরের এই জমিতে ফসল তেমন একটা হতোনা। ২০০২-২০০৩ মৌসুমে শখের বশে শুরু করলেন শিমুল গাছ লাগানো। ১০০ বিঘার বেশী জমিতে যা প্রায় ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে প্রায় ৩ হাজার শিমুল গাছ রোপণ করলেন। তবে গাছ রোপণ পরিচয় দিয়েছেন ব্যাপক মুন্সীয়ানার। প্রত্যেকটা গাছ সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়েছে। যেদিক থেকে তাকাবেন একটা গাছ থেকে আরেকটা গাছের দূরত্ব সমান। রোপণের পর থেকে পরিচর্যা ও নেওয়া হয়েছে সঠিকভাবে। যার ফলে বাগানের বর্তমান এই অবস্থা।

বসন্তকালের মৃদুমন্দ বাতাসে টকটকে লাল রঙের শিমুল বাগানে হেটে হেটে বিভিন্ন মানুষজন দেখে দেখে আমরা তৃষ্ণা পেতেই আমাদের তরমুজের কথা মনে পরলো। গাছ থেকে তুলে নিয়ে আসা যত্নে গড়া তরমুজ খেলাম শিমুল বাগানে দাড়িয়ে। তরমুজ গুকো অত্যন্ত মিষ্টি ও সুস্বাদু   ছিলো এবং নির্ভেজাল এটা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। তরমুজ খেয়ে খোসা গুলো বাগানে ছরিয়ে ছিটিয়ে না ফেলে নিজেরাই বাগানের বাইরে এক জায়গায় ফেললাম।  

তরমুজ খাওয়া শেষ কিন্তু আমাদের ছবি তোলা শেষ হচ্ছেনা। যে-কেউ ছবি তোলার জন্য দাড়ালেই পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে যাচ্ছে মিলন-স্যামি-সুইচিং। ওদের দুষ্টামি অনেক সময় চললো। তারপর আমরা ঠিক করলাম টেকেরঘাটে চুনাপাথর খনি বা লাইমস্টোন লেক যা বর্তমানে শহীদ সিরাজ লেক নামে নামকরণ করা হয়েছে তা ঘুরে আসার। যে কেউ শিমুল বাগান আসলে শহীদ সিরাজ লেক ও বারিক্কা টিলা খুব সহজেই ঘুরে যেতে পারেন। 

এখান থেকে টেকেরঘাটের একমাত্র যানবাহন মোটরসাইকেল। অনেকে সুনামগঞ্জ থেকেই মোটর সাইকেল ঠিক করে নিয়ে আসে শিমুল বাগান-বারিক্কা টিলা-টেকেরঘাট পর্যন্ত। লাউয়েরগঢ় বাজার পর্যন্ত যেকোনো ছোট গাড়ি চলাচল করতে পারে এরপরই যেহেতু জাদুকাটা নদী তাই খেয়া পার হতে পারে এরকম সুবিধা মোটরসাইকেলেই পাওয়া যায়। খেয়া নৌকাগুলোকে মোটরসাইকেল পারাপারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। আমরা প্রতি মোটরসাইকেল ২০০ টাকায় ঠিক করে উঠে পরলাম টেকেরঘাটের উদ্দেশ্যে। 

শহীদ সিরাজ লেক তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বড়ছড়া বাজার সংলগ্ন একটি পরিত্যাক্ত চুনাপাথর খনি বা লাইমস্টোন লেক। সিমেন্ট শিল্পের জন্য অত্যাবশকীয় চুনাপাথরের খনি ছিলো টেকেরঘাটে। চুনাপাথর তোলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিলো গ্রামীন আবহে অন্যরকম এক জীবনধারা। বর্তমানে এই খনি থেকে চুনাপাথর তোলা বন্ধ আছে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এই লেকের সৌন্দর্য অতুলনীয়। পানির রঙ স্বচ্ছ নিলাভ, ওপারে উচু পাহাড়ি সীমান্ত কাটা তার আর এপারে বিস্তীর্ণ হাওর অঞ্চল। অন্যরকম এক আবহ এই জায়গা জুড়ে। সীমান্তেই অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যোদ্ধা শহীদ সিরাজের সমাধী। লেক সংলগ্ন রয়েছে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। যা আপনাকে এই প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকায় জাতীয়তাবোধের চেতনায় শিহরণ জাগিয়ে দেয়।  বড়ছড়াতেই একটি স্থলবন্দর রয়েছে এখান দিয়ে প্রতিবছর হাজার হাজার টন কয়লা আমদানি হয় ভারত থেকে। 

আনুমানিক আধা ঘন্টা সময়ের মধ্যেই আমরা পৌছে গেলাম টেকেরঘাটে। ঘুরে ঘুরে দেখলান চমৎকার সৌন্দর্য ছড়ানো অসাধারণ এই লেক। লেকের চারপাশে অসংখ্য ছোট ছোট টিলার সমাহার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন। টিলার গায়ে সবুজ ঘাস দেখে মনে হয় যেনো কার্পেট মোড়ানো রাজার রাজ দরবার। খনি চলাকালীন এখানে বেশ কর্মচঞ্চল পরিবেশ ছিলো তা আচ করা যায় এখানে আসলেই। পরিত্যক্ত রেললাইন আর বিভিন্ন স্থাপনা দেখে। বেশ কিছুক্ষন সময় এখানে কাটিয়ে আবার ফিরতি পথে রওনা হলাম। মোটরসাইকেল আমাদেরকে আবার শিমুল বাগানে নামিয়ে দিলো। তারপর তপ্ত রোদে বালুকাময় জাদুকাটা পাড়ি দিয়ে খেয়া ঘাটে এসে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত সকলে। স্বচ্ছ জাদুকাটার শীতল জলে হাত মুখ ধুয়ে কিছুটা ক্লান্তি কমানোর চেষ্টা করলাম অনেকেই। 

লাউয়েরগঢ় বাজারে এসে হাওর আর নদীর মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে নিলাম। বাজারে খুব ভালো হোটেল আশা করা ঠিক হবেনা। গ্রাম্য বাজারের মতো পরিবেশ। তবে বাজারের মধ্যে পুরুষ-মহিলাদের জন্য আলাদা  টয়লেট আছে বেশ পরিচ্ছন্ন। খাবার শেষ করে আবার অটোরিকশায় সুনামগঞ্জ যাত্রা। ফিরতি পথে গ্রাম্য বাজারে থামিয়ে থামিয়ে তেলে-ভাজা আর চা চক্র চলেছে কয়েকবার। শিমুলফুলে মন রাঙিয়ে ফিরে এলাম ব্যাস্ত দিনের ডাকে, স্মৃতি হিসেবে জমা হলো কিছু অকৃত্রিম অভিজ্ঞতা। 

যাতায়াতঃ ঢাকা থেকে সরাসরি সুনামগঞ্জের বেশ কিছু প্রথম সারির  বাস সার্ভিস আছে। হানিফ, শ্যামলি, মামুন সায়েদাবাদ থেকে। এনা পরিবহনের বাস মহাখালী থেকে নন এসি বাসে ভাড়া ৫৫০ টাকা। এছাড়া বিমান, ট্রেন বা বাসে সিলেট এসে সিলেট থেকে বাসে আসা যাবে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ থেকে সরাসরি ৫০০-৬০০ টাকায় মোটরসাইকেল রিজার্ভ করে সব গুলো স্পট একসাথে ঘুরে আসতে পারেন। প্রতি মোটরসাইকেলে দুইজন উঠতে পারবেন। 

খাবার ও আবাসনঃ এই মুহুর্তে শিমুল বাগানের মধ্যেই একটি রেস্টুরেন্ট চালু করা হয়েছে পর্যটকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে। এছাড়া লাউয়েরগঢ় বাজার, বড়ছড়া বাজার, বারিক্কা টিলা বাজারে খাবারের হোটল আছে। সিলেটের বিখ্যাত পানসি রেস্টুরেন্ট ও চালু হয়েছে সুনামগঞ্জে।       

কেউ রাতে থাকতে চাইলে বড়ছড়া বাজারে থাকার হোটেল আছে। তাহিরপুরে  হোটেল ও বাংলো আছে,  সুনামগঞ্জ শহরেও বেশ কিছু মিডিয়াম মানের হোটেল আছে। 

ছবি অপু চন্দ্র দাস

Leave a Reply